দ্রুত মন ভালাে করার ১০ উপায়ঃ
ডায়েট বা ব্যায়াম স্বাস্থ্য ভালাে রাখার জন্য জরুরি। এর থেকেও জরুরি সুখী থাকা। তবে কোনাে কারণে যদি মন খারাপ থাকে বা নিজেকে সুখী না মনে হয় তবে চিন্তিত হবেন।
ভাবুন সময়টি যদিও চাপের, তবে হঠাৎ মজার কিছু ঘটবে, ভালাে কিছু হবেই আপনার জীবনে। এমন আশার কথা শুনিয়ে ইয়াহু হেলথ বাতলে দিয়েছে দ্রুত মন ভালাে করার কিছু উপায়ঃ
১. খেলা করুন (তবে ফোনে নয়)
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একত্রিত হােন, পাশাপাশি কিছু বন্ধুকে দাওয়াত করুন। এরপর সবাই মিলে মজাদার কোনাে খেলা খেলুন। ভালাে বন্ধুদের সঙ্গ আপনার সময়গুলােকে আনন্দে ভরিয়ে তুলতে সাহায্য করবে।
২. হাঁটতে বেরিয়ে যান
ঘরে যদি কিছু করার না থাকে, তবে মন ভালাে করতে হাঁটতে বেরিয়ে যান। বাইরের তাজা হাওয়া আপনার মনকে সতেজ করবে।
৩. বন্ধুদের ফোন করুন
ম্যাসেজ করবেন না, বন্ধুর সঙ্গে ফোনে কথা বলুন। তাঁকে বলুন আপনার কষ্টের কথা। পরামর্শ চাইতে পারেন তাঁর কাছ থেকে।
৪. নতুন কিছু করুন
নেতিবাচক ভাবনা থেকে বেরিয়ে যান। নতুন কিছু করুন। ডিমে ভর্তি হােন বা রান্নার ক্লাসে ভর্তি হােন। আগামীকাল সকালে উঠে নতুন কী করবেন তাঁর পরিকল্পনা করুন।
৫. বিচ্ছিন্ন হােন
এক বা দুই মিনিটের জন্য সামাজিক যােগাযােগের মাধ্যম থেকে বিছিন্ন হয়ে যান।
৬. গান গাইতে পারেন
দ্রুত মন ভালাে করতে গেয়ে উঠতে পারেন পছন্দের কোনাে গান। গ্যারান্টি দিচ্ছি, মন ভালাে হয়ে যাবে।
৭. সাহায্য করুন
অন্যকে সাহায্য করুন। পরিবারের সদস্যদের কাজে সাহায্য করুন বা বন্ধুদের কাজে সাহায্য করুন।
৮. রাঁধুন
বেশি মন খারাপ লাগলে রাঁধতেও শুরু করতে পারেন। অনেক সময় রান্না করাও আপনার মেজাজকে ভালাে করে দিতে পারে।
৯. হাসুন
হয়তাে হাসার মতাে পরিস্থিতি নেই, তবু চেষ্টা করুন হাসার। হাসি কখনাে কখনাে চাপ। কমাতে সাহায্য করে, মেজাজ ভালাে রাখে, বিষন্নতাকেও দূরে রাখে। তাই হাসুন।
১০. সব ঠিক হয়ে যাবে
ভাবুন সব ঠিক হয়ে যাবে। যদিও খুব চাপের সময় এই ভাবনাটি সহজেই আসবে না, তবু ভাবুন সব ঠিক হবে।
ডায়েট করার নিয়ম ও সময়ঃ
আধুনিক ও যান্ত্রিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বাড়ছে আমাদের শরীরের ওজন। আর এ থেকে মুক্তি
পেতে কেউ ছুটছেন জিমে আবার কেউ বা করছেন ডায়েটিং। অনেকে ওজন বেড়ে গেলে বা ওজন বাড়ার
ভয়ে হঠাৎ করে ডায়েটিং শুরু করেন। এক্ষেত্রে অবশ্য মেয়েরা অনেকখানি এগিয়ে। কিন্তু কোন
কিছুনা ভেবে ডায়েটিশিয়ান বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ ব্যতিত অথবা না বুঝে ডায়েট শুরু করলে
কিংবা একেবারেই খাবার কমিয়ে দিলে ওজন তাে কমেই না বরং শরীরে বিভিন্ন ধরনের পষ্টির
অভাব দেখা দেয় যা সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার প্রধান অন্তরায়।
আমরা কেন মােটা হই বা আমাদের কেন ওজন বাড়ে, তা জানেন কি? আমাদের ওজন বাড়ার সাথে
দেহের ক্যালােরির অনেক বড় সংযােগ রয়েছে। আমরা প্রতিদিন যতটা ক্যালরি গ্রহণ করি তা যদি
দেহে শুধুই জমা হতে থাকে। তাহলে নিঃসন্দেহে আমরা মােটা হবে। অর্থাৎ দেহের ওজনটা ঠিক
রাখতে ক্যালরি ক্ষয়ের গুরুত্ব অনেক বেশি। কিন্তু ক্যালরি ক্ষয় নিয়েই সব ঝামেলা।
এক কথায় আমাদের তখনই ওজন বাড়ে যখন আমরা আমাদের প্রতিদিনের কাজে এবং ব্যায়ামে
ব্যবহৃত ক্যালরির চেয়ে বেশি ক্যালরি গ্রহণ করি। অধিকাংশ প্রাপ্তব্যস্ক মানুষেরই কম খাওয়া এবং
বেশি কাজ করা উচিত। স্বাস্থ্যকর উপায়ে এবং দীর্ঘমেয়াদে ওজন কমানাের একমাত্র উপায় হচ্ছে
স্থায়ীভাবে আপনার খাদ্যাভ্যাস এবং ব্যায়ামে পরিবর্তন আনা। কিছু ছােট পরিবর্তন যেমন কম খাওয়া
এবং ফ্যাট, চিনি ও অ্যালকোহল যুক্ত পানীয় পান থেকে বিরত থাকলে তা আপনার ওজন কমতে
সাহায্য করতে পারে। অনেকেই মেহবার ভযে একেবারেই খাবার কমিয়ে দেন।
থেকে বিরত থাকলে তা আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। অনেকেই মােটা হবার ভয়ে
একেবারেই খাবার কমিয়ে দেন। খাওয়া কমিয়ে দিলে ওজন কমে ঠিকই কিন্তু শরীরে দেখা দেয় নানা
ধরনের সমস্যা। তাই নিয়মিত খাদ্য গ্রহণ করা উচিৎ এবং এমন খাদ্য নির্বাচন করা জরুরি যা খেলে
ওজন বৃদ্ধি হবে কিন্তু শরীর তার প্রয়ােজনীয় পুষ্টি ঠিকই পাবে।
সঠিক পদ্ধতিতে স্বাস্থ্যকরভাবে ওজন কমানাের উপায়; এখানে স্বাস্থ্যকরভাবে খাবার খাওয়া। এবং
ওজন কমানাের সহজ উপায় বর্ণিত হল : আপনার খাবারে ফ্যাটের পরিমাণ কমানাের জন্য আপনি
মাংসের বাড়তি চর্বি কেটে ফেলতে পারেন। ফুল ক্রিম দুধের পরিবর্তে সর ছাড়া দুধ পান করতে
পারেন, মিষ্টি দই এর পরিবর্তে টক দই ব্যবহার করতে পারেন। বাইরের তৈরি অস্বাস্থ্যকর খাবারের
পরিবর্তে ঘরে তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবার নির্বাচন করতে পারেন। শস্য দ্বারা তৈরি খাবার খান, যেমন
লাল আটার রুটি, বাদামী চাল এবং পাস্তা এগুলাে অন্যান্য খাবারের চেযে ধীরে ধীরে হজম হয় ফলে
দীর্ঘ সময় ধরে আপনার পেট ভর্তি থাকে। ডায়েটিং করে সকালের নাস্তা বাদ দেয়া যাবে না।
অবশ্যই সকালের নাস্তা করবেন। একটি স্বাস্থ্যকর সকালের নাস্তা আপনাকে দিন শুরু করার জন্য
প্রয়ােজনীয় শক্তি যােগাবে। কিছু গবেষণায় দেখা যায়, যেসব মানুষ নিয়মিত সকালের নাস্তা খায় তারা
সাধারণত বেশি ওজনের অধিকারী হন না। বিকেলে যদি আপনার কোন নাস্তা খেতে ইচ্ছা করে, তবে
প্রথমে একটি পানীয় পান করুন, যেমন- এক গ্লাস পানি বা এককাপ চিনি ছাড়া চা। প্রায়ই যখন
আমরা নিজেদের ক্ষুদার্থ মনে করি, আসলে তখন আমরা তৃষ্ণার্থ থাকি। উচ্চ ক্যালরির পরিবর্তে স্
বল্প-ক্যালরির পানীয়। নির্বাচন করুন অর্থাৎ যেসব পানীয়তে কম মাত্রায় ফ্যাট, চিনি এবং
চিনিযুক্ত কোমল পানীয়ের পরিবর্তে স্বচ্ছ ও এক টুকরাে লেবুসহ পানীয় বাছাই করতে পারেন।
মাংসের চর্বি, মুরগির চামড়া বর্জ্য ভেবে ফেলে দিন। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় জমাট থাকে এমন চর্বি যেমন ঘি,
মাখন ও মার্জারিনকে খাদ্য তালিকা থেকে দূরে রাখুন। আমিষের দৈনিক চাহিদা মেটাতে একটা ডিম,
বীজ বাদাম, ডাল ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় স্থান দিন। মূল খাবার গ্রহণের মাঝের সমযের ফাঁকটুকু
পূরণ করুন ফলমূল বা কম ক্যালরির নাশতা যেমন মুড়ি বা সবজি সুপ,শশা, গাজর, দেশি ফল ইত্যাদি
দিয়ে। মােটা হওয়ার ভয়ে কখনাে এক বেলার খাবার। বাদ দেয়া উচিত নয়; বরং সারাদিনে ৩ বেলার খাবারের
পরিবর্তে ৫ বেলা খাবার গ্রহণ করলে ভাল ফল পাওযা যায। অল্প অল্প করে ঘন ঘন। খাবার খেলে শরীরে
কর্মশক্তির অভাব পরিলক্ষিত হয় না। ওজন কমানাের জন্য ক্রাশ ডায়েটে না যাওয়াটাই উত্তম।
এতে অল্প সময়ে ওজন। দ্রুত ওজন কমানাের জন্য ক্রাশ ডায়েটে না যাওয়াটাই উত্তম।
এতে অল্প সময়ে ওজন কমলেও শরীরে মেদ জমতে দেরিও লাগে না।
তাই সঠিক নিয়ম মেনে ডায়েট করুন। এতে প্রথম দিকে ওজন যদি না কমে তবে হতাশ হবেন না।
ধৈর্য ধরে ডায়েট চার্ট মেনে চলুন।
মনে রাখবেন ওজন নিয়ন্ত্রনের জন্য শুধু খাবার কমালেই হবে না এর জন্য ব্যায়াম ও প্রযােজন।
নিয়মিত ব্যায়াম শুধু আপনার ওজনই কমাবে না, তা আপনার মারাত্মক রােগ যেমন-উচ্চ রক্ত চাপ,
হৃদ রােগ ইত্যাদি হওয়ার ঝুঁকিও কমাতে পারে।
সকালে হাঁটার ফলে বিশুদ্ধ বাতাস ও সুন্দর পরিবেশ আপনার হৃৎপি-ও মনের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে
তােলে। হাঁটার সময় হৃৎপি-শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন করে। ফলে প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ
সুস্থ ও সচল থাকে এবং মানুষ দীর্ঘজীবী হয়।
আপনি কতটুকু ব্যায়াম করবেন তা আপনার লিঙ্গ, বয়সের উপর এবং কাজের ধরনের উপর নির্ভর
করবে। হাঁটা হলাে সব ধরনের ব্যায়ামের মধ্যে সবচেয়ে উপকারী। প্রতিদিন সকালে অন্তত ২০ থেকে
৩০ মিনিট টানা হাঁটার অভ্যাস করুন কারণ প্রতিদিন সকালে মাত্র ২০-৩০ মিনিটের এই হাঁটা সারা
দিন ভালাে থাকতে সাহায্য করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
রােগবালাই থাকুক আর না থাকুক, রসনা তৃপ্তির সময় খাবার খানিকটা বাছাই করা উচিত। কিন্তু খাদ্য
নিয়ন্ত্রণ বা ডায়েটিংযের কথা বলা হলে অনেকে ভাবেন সব খাবার বন্ধ হয়ে গেল বুঝি। সত্যিকার অর্থে
ব্যাপারটা তা নয়। দৈনিক, ভাত, ডাল, মাছ, মুরগি, সব ধরনের সবজি পরিমিত পরিমাণে খেয়ে এবং
রসনার তৃপ্তি করেও শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
ডায়েট করার আগে জেনে নিন ডায়েট আসলে কী? কার জন্য কোন ডায়েট প্রযােজ্য, কত ধরনের
ডায়েট হয়, কোন ডায়েটের কী। উপযােগিতা, ডায়েটের কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কি না ইত্যাদি
বিষয়। প্রযােজনে পরামর্শ নিন একজন অভিজ্ঞ ডায়েটিশিয়ানের। কারণ আপনার শরীরের চাহিদা
অনুযায়ী, আপনার বেছে নেয়া ডায়েট উপযােগী কি না তা একজন ডায়েটিশিয়ান বা পুষ্টিবিদ ভাল
বলতে পারবেন।
0 মন্তব্যসমূহ